চট্টগ্রামের রাউজান থানার এস আই জাবেদ শেখ কর্তৃক তুলে নেওয়ার পর সদ্য খুন হওয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন-আহবায়ক শহীদ নুরুল আলম নুরু হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদলের বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করার পাশাপাশি বিভিন্ন মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে ও প্রতিবাদ মূখর লেখালেখিও ছিল চোখে পড়ার মতো, তারই ধারাবাহিকথায় কক্সবাজার শহর ছাত্রদলের সাধারণ-সম্পাদক আল-আমিনের শহীদ নুরুর মেয়ের পক্ষ হয়ে লেখা একটি খোলা চিঠি আলোড়ন সৃষ্টি করে পুরা জাতীয়তাবাদী মহলে এবং সারা দেশ জুড়ে। এই লেখাটি কাঁদিয়ে দিল পুরু জাতিকে। লিখাটি ফেইজবুকে অসংখ্য বার শেয়ার এবং লাইক কমেন্টসে ভরে যায়। এতে সাধুবাদ জানান জাতীয়তাবাদী মহলের অনেক নেতাকর্মী।
আবার পক্ষান্তরে অনেকে লিখাটিকে কপি করে কার্টিসি না রেখে নিজের নামে চালিয়ে দেয় একটি মহল। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা। এই অপব্যবহার দেখে নিজের ফেইজবুক ওয়ালে বিবৃতি দিয়ে একটি স্টাটাস লিখেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আক্তার নূর, তাতে তিনি একজন লেখককে তার লিখাংশটির মায়ের সাথে তুলনা করেন আর লিখা চুরিকে মায়ের কাছ থেকে সন্তান চুরির ন্যায় অপরাধ বলে দাবি করেন।
নিচে পাঠকের জন্য আল-আমিনের লিখাটি হবুহু তুলে ধরা হলঃ-
ছাত্রদল নেতা শহীদ নুরুল আলম নুরু বরাবরে উম্মে হাবীবার গোপন চিঠিঃ-
প্রিয় আব্বু আমার বিশ্বাস তুমি ভালো আছো, যদিও বা তুমি আমাদের মত কিছুটা হলেও মনোঃকষ্টে ভুগতেছে।আমি,নুবাইদা,নঈম ও আম্মুর চিন্তায় তুমি কিছুটা হলেও অশান্তুিতে আছো।আমিও তেমন ভাল নেই,কারণ তুমি এই পৃথিবীতে থাকতে যাদের জন্য জীবন বাজি রেখেছে,যাদের জন্য জীবনের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করেছে, তারা অনেকে তোমার সেই বিশ্বাসের মূল্য দিতে পারে নি,বেঈমানি করেছে তোমার রক্তের সাথে।অনেকে আবার কিছু করতে না পারলেও তোমার জন্য জীবন বাজি রেখে তোমার প্রতি শ্রদ্বা জানিয়েছে।
যাক সে কথা, তুমি কি আম্মার খবর জান?নিশ্চয় জান না,আম্মু বিগত তিন দিন কোন কিছু না খেয়ে আছে।শুধু মন চাইলেই একটু পানি খাই, আর তোমার অনেক পুরাতন শার্ট গুলি বুকে চেপেঁ ধরে কান্না করে, সাথে আমিও কান্না ধরে রাখতে পারি না।আব্বু আরো জান? আমাদের ছোট ভাইটা তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে আম্মুর দুধ খাইতে পারে নি, সাথে নুবাইদাও তেমন কিছু খাইনি।আমারটা না হয় বললাম না।
আব্বু তুমি কখন ফিরে আসবে?কখন তোমার বুকে আমি চুমু খেয়ে ঘুমাবো? আব্বু তুমি কি আমায় স্কুলে নিয়ে যাবে না?আমায় কি পার্কে নিয়ে যাবে না ?
(কান্নায় ভিজে গেল চিঠির পাতা) আব্বু জানি তুমি আর ফিরে আসবে না! তুমি কখনো আমায় আর হাবি বলে ডাকবে না!কখনো আর বকা দিবে না!কখনো আর পড়ার জন্য চাপ দিবে না।
জানি আমি, নুবাইদা, ছোট ভাই,ও আম্মু তোমাকে আর কাছে পাবো না, কিন্তু তুমি কি জান ?
আমি তোমাকে ভুলে যাবো, কিন্তু তোমার হাত দুটি শক্ত রশি দিয়ে বাধাঁ সে ছবি ভুলতে পারবো না।তোমার সেই নিথর রক্তাক্ত দেহ আমি চাইলে মন থেকে মুছতে পারবো না। (আবারো চিৎকারস্বরে কান্না আর কান্না)আব্বু সেই কর্ণফুলির রক্তের স্রোত আমার অন্তরে ভাসমান, আব্বু তোমার জানাযায় লাখো মানুষের উপস্থিতি আমি ভুলে যাবো না, আব্বু তোমার হাতের সেই লাল রশির বাধঁন আমি আজীবন মনে রাখবো। আব্বু যতদিন বাঁচবো ততদিন তোমার বদ্ব হাত দুখানা আমার হৃদয়পটে ভাসবে, আব্বু জানি তুমি আমাদের এই করুণ অব্স্থা দেখে কষ্ট পাবে, তুমি কষ্ট নিও না, চিন্তা করো না, তোমার মেয়ে এই তাজা রক্তের ইতিহাস ভুলবে না, সময় এলেই জবাব দিব।
যেখানে থাকো ভাল থেকো।
ইতি
তোমার মেয়ে উম্মে হাবিবা।
পাঠকের মতামত: